সবুজ সুতো দিয়ে সেলাইয়ের মাধ্যমে
তারপর পাঁচির হাতের ব্যাগটা নিয়ে সোজা মৌয়ের কাছে গিয়ে তার পাশে রেখে বললো, ‘মা, এই ব্যগে আমার গাছের কিছু পেঁপে, পুঁইশাক, একটা লাঊ আর কিছু অন্য শাক আছে। তোমাগে জন্যি আনিছি। আমি গরীব মানুষ, কি আর দেব? যা কিছুই দিই না ক্যান্ বাবার উপকার শোধ হয়না। তাই উপকার শোধ না, আমি ভালোবেসে এনেছি, মা’
এই পরিস্থিতিতে এইসব জিনিস ফিরিয়ে দেওয়া যায়না। রাখার ইচ্ছা না হলেও রাখতে হয়। মৌএর মুখের ভাবও নরম হয়েছে। বললো, ‘এসব বেচলে তুমিতো কিছু টাকা পেতে? কিছু টাকা নেও’
‘না মা, ওকথা বলোনা। নিজের গাছের জিনিস ছেলেরে দেব, টাকার কথা আসে?, নেও মা!’
মৌ বললো, ‘ঠিক আছে, আমি চা করে আনছি, চা খেয়ে যেতে হবে’ বলে ব্যাগটা নিয়ে ঘরের মধ্যে গেল।
মৌ দেখছি এখন অনেকটা অন্যরকম হয়ে গেছে। এক সময় আমাকে অনেক কথা শুনিয়েছে, কোথাকার কোন শাক বেচা বুড়ি, তার জন্যে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ হচ্ছে। আদিখ্যেতা। কিন্তু আমি জানি সে বাইরে যাই বলুক, মনে মনে খুসিই হয়েছে। অসুখের কথা শুনে দু একদিন জিজ্ঞাসাও করেছে, ‘তোমার বুড়ি কেমন আছে?’
বুড়ির নিজের হাতে একটা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। এবার বুড়ি সেটা খুললো। তার মধ্যে আরেকটা ক্যারি ব্যাগ। সেটা খুলে বের করলো একটা ছোট কাঁথা। নকশী কাঁথা। দেড় বাই দু’ফুট সাইজের হতে পারে। সেটা খুলে মেলে ধরলো। অনেকদিনের পুরানো কাঁথা। ভিতরটা সাদা ছিল, এখন লালচে ভাব হয়ে গেছে। চার পাশে প্রায় দেড় ইঞ্চি চওড়া সবুজ রঙের লতা পাতার বর্ডার। তার মধ্যে ফুটে আছে নানা রঙের ফুল। ভিতরে লম্বা-লম্বি একটা দাগ- অনেকটা দাঁড়ের মতো। তার উপরে মুখোমুখি বসে আছে দুটো টিয়া পাখী। সবুজ রঙ, ঠোঁট আর চোখ লাল। সবুজ সুতো দিয়ে সেলাইয়ের মাধ্যমে পালকের ডিজাইন করা হয়েছে। দাঁড়ের নীচে দু’লাইনে লেখা ‘সংসার সুখের হয় / রমনীর গুনে’। কোলের উপর পেতে তার উপর হাত বোলাতে বোলাতে বুড়ি বললো, ‘আমার নিজের হাতে ক