বুড়ীও চলে গেছে তার সেই বিবাহ পরবর্তী জীবনে। কুঞ্চিত চোখের কোন কখনো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে, কখনো বিষাদে ছেয়ে যাচ্ছে। তার সারা জীবনের ওঠা-পড়ার ছবি চোখে-মুখে খেলে বেড়াচ্ছে। ধীরে ধীরে বললো, ‘দ্যাশ থেকে কিছুই আনতে পারিনাই। কয়েকটা কাঁসার গ্লাস আর এই কাঁথা খান ছাড়া। নাতিটা গ্লাসগুলো বেঁচে খাইছে। তোমাগে কাছে এইটা রেকে আমি নিশ্চিন্তি মরতি চাই। আমার সব চাইতে বড়ো ধন’ বুড়ির গলা আবেকে-কান্নায় বুঁজে এল।
কিছুক্ষন সবাই চুপ করে থাকলো, তারপর মৌ বললো, ‘বেশ। আমি নেব মাসীমা। তোমার এই সম্পত্তি আমি যতোদিন থাকি, যত্ন করে রাখবো। কথা দিলাম’
বুড়ি এবার উঠে এসে মৌএর হাত ধরে বললো, ‘তোমার মতো মেয়েদের জন্যিই সংসার সুখের হয় মা। তুমি আমারে ভারমুক্ত করলে। আমি ঠাকুরকে বলি, তোমরা সুখি থাকবা’
বুড়ি নিজের যায়গায় গিয়ে বসল। মৌ উঠে গিয়ে তার হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিল।
তারা ধীরে ধীরে চা খেয়ে মামুলি দু’একটা কথা বলে বিদায় নিল। মৌ বললো সে একদিন যাবে ওদের বাড়ি। আমি ব্যস্ত হয়ে অফিসের তাড়ায় স্নান করতে উঠে গেলাম।
অফিসে এখন অডিট চলছে। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়। এ নিয়ে মৌয়ের সাথে আর কোন কথা হয়নি। দু’দিন পরে অফিস থেকে ফিরে চা খাওয়ার পরে মৌ বললো, ’চলো- তোমাকে একটা জিনিস দেখাই’ বলে আমাদের শোবার ঘরে টেনে নিয়ে এলো। আলো বন্ধ ছিল। আমাকে পুব দেয়ালের দিকে দাঁড় করিয়ে একসাথে সবক’টি আলো জ্বেলে দিল।